যেভাবে আপনার পাওয়ারপয়েণ্ট প্রেজেন্টেশন ডিজাইনটি আরও ভাল করতে পারবেন
() translation by (you can also view the original English article)



সুন্দরভাবে ডিজাইন করা স্লাইড থেকেই দুর্দান্ত সব প্রেজেন্টেশন তৈরি হয়। বেশীরভাগ ডিজাইন যা আপনি দেখবেন তা অদৃশ্য থাকে, এটা কেবল তখনই ঘটে যখন স্লাইড ডিজাইনে কোনও ত্রুটি থাকে (উদাহরনস্বরূপ টকটকে রঙগুলোর কথা চিন্তা করুন) এটা দিয়ে আপনি বুঝবেন বাজে ডিজাইন কিভাবে একটি প্রেজেন্টেশনে সমস্যার কারণ হতে পারে।
এই টিউটোরিয়ালে, আমরা প্রেজেন্টেশন ডিজাইনের মূলসূত্রগুলো তুলে ধরবো। আপনি হয়তো খেয়াল করলে দেখবেন যে, সুক্ষ্ম বিবরন প্রদান আনন্দদায়ক ও সুশ্রী প্রেজেন্টেশনের ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী ফলাফল বয়ে আনে। এ থেকে আপনি শিখবেনঃ
- দৃশ্যমান শ্রেণীক্রম - দৃশ্যমান শ্রেণীক্রমের মূলসূত্র বুঝে ঊঠা এবং কিভাবে আপনি এটাকে প্রেজেন্টেশনে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারবেন তা জানা।
- স্লাইড লেআঊট - দৃশ্যমান অনুক্রমের মূলনীতিগুলো একটি কার্যকর পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইড ডিজাইনে রূপান্তরিত করা।
- টাইপোগ্রাফি - সঠিক মুদ্রাক্ষর বেছে নেয়া।
- রঙ - রঙ তত্ত্বের মূলনীতি।
- বিস্তারিত - অতিরিক্ত কিছু বিষয় যা আপনার প্রেজেন্টেশনকে দুর্দান্ত করে তুলবে।
পরিশেষে, যখন আমরা পাওয়ারপয়েন্টের কোন একটি প্রেজেন্টেশন বা উপস্থাপনার উপর কাজ করবো, তখন দেখবো যে কিভাবে আমরা উপরের সব প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করতে পারি।
আপনি যদি কোনও প্রস্তুত প্রেজেন্টেশন ডিজাইন ব্যবহার করে এই প্রক্রিয়াটি সংক্ষিপ্ত করতে চান, তাহলে আমি আপনাকে GraphicRiver মার্কেটপ্লেসের trending PowerPoint templates লিংকটি চেক করে দেখতে বলবো। আপনি যদি একটি সুন্দর প্রেজেন্টেশন খুব অল্প সময়ের মধ্যে অতি দ্রুত করতে চান, তাহলে এটি আপনার অনেক মূল্যবান সময় সাশ্রয় করবে।
চলুন, সহজেই একটি দুর্দান্ত পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ডিজাইনের পিছনের মূলনীতিগুলো খুঁজে বের করি।
১। দৃশ্যমান শ্রেণীক্রম
সব ধরনের ডিজাইনই দৃশ্যমান শ্রেণীক্রম দ্বারা শুরু হয়। দৃশ্যমান শ্রেণীক্রম আসলে কি? এটা আসলে গুরুত্ব অনুযায়ী উপাদানগুলোকে একটি শৃঙ্খলায় সাজানো বুঝায়। অন্য কথায়, অন্যদের তুলনায় একটি শক্তিশালী বৈসাদৃশ্য দিয়ে উপাদানগুলিকে ডিজাইন করে, এটুকু বুঝতে পারা যে, কিভাবে প্রভাব তৈরি করা সম্ভব।
দৃশ্যমান শ্রেনীক্রমের মূল তত্ত্ব আপনাকে আপনার পিপিটি ডিজাইন স্লাইডের গঠন সংজ্ঞায়িত করতে সহায়তা করবে। দৃশ্যমান অনুক্রমের সঠিক ব্যবহার এটা নিশ্চিত করে যে সঠিক উপাদানগুলোই আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
আপনি বেশ কয়েকটি ডিজাইন টেকনিকের মাধ্যমে দৃশ্যমান অনুক্রম অর্জন করতে পারেনঃ
- নির্দিষ্ট উপাদানগুলো সম্পূর্ণরূপে ফুটিয়ে তুলতে বিসদৃশ রঙ ব্যবহার করুন।
- কোনও জিনিষকে অন্যদের অপেক্ষা পরিষ্কারভাবে তুলে ধরতে টেক্সট অথবা ছবির সাইজ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারেন।



উপরের ধারণাটি কোনও একটি উপাদানে দৃশ্যমান গুরুত্ব যোগ করার ক্ষেত্রে বুঝানো হয়ে থাকে। এটা বাস্তবে কিভাবে কাজ করে?
নিচে, আপনি ঠিক একইরকম দুটি স্লাইড দেখতে পাবেন। একটিতে কোনও দৃশ্যমান শ্রেনীক্রম ব্যবহৃত হয় নি, অন্যটিতে সাধারন রঙ ও টাইপোগ্রাফি (যেটা সম্পর্কে আপনি পরবর্তীতে আরও জানবেন) ব্যবহার করা হয়েছে নির্দিষ্ট কন্টেন্টের দৃশ্যমান গুরুত্ব বাড়াতে।






সাধারণভাবে, ডিজাইনের ক্ষেত্রে মনে রাখা উচিত যে, কিছু বিষয়বস্তু অন্যান্য সামগ্রীর চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে প্রদর্শিত হবে যদি আপনি চাক্ষুষ অনুক্রমের সঠিক প্রয়োগ করে থাকেন। এই মূলনীতিটি আপনার সুবিধা অনুযায়ী প্রয়োগ করতে পারেন। নিজেকে প্রশ্ন করুন যে আপনার প্রেজেন্টেশনটি ব্যতিক্রম করে তুলতে আপনার আর কি কি প্রয়োজন।
উদাহরন স্বরূপ
আপনি একটি আর্থিক প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে যাচ্ছেন, এজন্য আপনি আপনার দর্শকদের জানাতে চাচ্ছেন যে, গত বছরের ত্রৈমাসিকে বিপণনের ঘাটতির জন্য বেচাকেনা খারাপ হয়েছিলো।
যেটা অবাস্তব, তা হচ্ছে আপনার দর্শকদেরকে কি পরিমান বিক্রি হয়েছিলো তার সঠিক পরিসংখ্যান বোঝানো। একই সাথে কোন বিক্রেতা বাজেভাবে সঞ্চালন করেছিলো এবং মার্কেটিং অ্যাকশনের পূর্ণ লিস্ট যেগুলো ব্যর্থ হয়েছিলো তা তুলে ধরা আসলে সম্ভব নয়।
একটি প্রেজেন্টেশন ছোট্ট সময়ের মধ্যে অনেক বেশী তথ্য প্রদান করে থাকে, এবং দুর্ভাগ্যবশতঃ মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ ক্ষমতা সংক্ষিপ্ত। মূল বার্তার উপর আলোকপাত করুন এবং দৃশ্যমান শ্রেনীক্রম ব্যবহার করে মূল ধারণাগুলো তুলে ধরুন।
এখন আমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছি যে দৃশ্যমান অনুক্রম কিভাবে কাজ করে, এবার চলুন পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইড লেআউট সমূহ কিভাবে ডিজাইন করতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।
২। স্লাইড লেআউট ডিজাইন
দৃশ্যমান শ্রেনীক্রমের উপর ভিত্তি করে, আপনি ফলপ্রদ পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইড ডিজাইন তৈরি করতে পারেন।
প্রতিটি স্লাইডের জন্য, মূল কৌশল হচ্ছে শ্রোতাদের সামনে তুলে ধরার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি কি তা বুঝতে পারা। এর উপর ভিত্তি করে আপনি নকশার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে পারেন যে, এই সামগ্রিক ব্যাপারগুলো মানুষ সত্যিই মনে রাখবে।
এই প্রক্রিয়াটি অন্যান্য স্লাইড ডিজাইনের ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আপনার হয়তো একটি সারিতে একই বিষয়ের উপর বেশ কিছু স্লাইড রয়েছে। কিন্তু, পরিশিষ্ট সহ চূড়ান্ত স্লাইডটি হতে পারে এমন একটি স্লাইড, যাতে শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য আপনি অতিরিক্ত দৃশ্যকল্প যোগ করতে চাচ্ছেন। যেমন, প্রথমবারের মতো কোন ছবি যোগ করা বা লেখা যথারীতির চেয়ে কিছুটা বড় করা ইত্যাদি। এতে আপনার স্লাইড বিন্যাস্ত হওয়ার পাশাপাশি এতে দৃশ্যমান অনুক্রমেরও সঠিক প্রয়োগ হবে।



বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, প্রয়োগ করার জন্য সবচেয়ে কার্যকর ডিজাইন কৌশল হচ্ছে যত কম তত ভালো। যদি আপনার কিছু মূল পরিসংখ্যান থাকে, যেমন শতকরা হার, তাহলে নিচের ডিজাইন পদ্ধতিগুলো সাহায্যকারী হতে পারেঃ
- প্রথমত, গ্রাফ আকারে প্রদর্শন করুন (অথবা সমস্ত পরিসংখ্যানসমূহ) যা গুরুত্বপূর্ণ কিছু নম্বর প্রদর্শন করে থাকে।
- কোন রকম অতিরিক্ত উপাদান যোগ করা ছাড়াই মূল শতকরা হারগুলো একটি একক স্লাইডে তুলে ধরুন, যাতে মানুষের মনোযোগ এই নম্বরগুলোর উপরই নিবদ্ধ থাকে।
এটা হচ্ছে আপনার ডিজাইন ও কন্টেন্টকে স্বস্তিদায়ক করার একটি পদ্ধতি। আপনি যেই ধারণাটি মাথায় রাখবেন তা হচ্ছে, আপনি আপনার কন্টেন্ট অথবা ডিজাইনকে একটি লুকানো ক্রম অনুযায়ী সাজাবেন।
পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কোনও মূল বার্তার উপর জোর দেয়ার আরেকটি কৌশল। একটি গ্রাফ তুলে ধরা এবং তারপর একটি পরিসংখ্যান দুটো আলাদা স্লাইডে তুলে ধরা হচ্ছে কার্যকর পুনরাবৃত্তির ভালো উদাহরণ।
আপনি যদি স্লাইড বিন্যাসের জন্য অনুপ্রেরণা খুজে থাকেন, তাহলে পাওয়ারপয়েন্ট টেম্পলেটের এই সংগ্রহটি দেখতে পারেন, অথবা নীচের বাছাই করা ট্রেন্ডিং পিপিটি প্রেজেন্টেশন ডিজাইনগুলো দেখতে পারেনঃ
৩। টাইপোগ্রাফি
সঠিক টাইপোগ্রাফি নির্বাচন আপনার পাওয়ারপয়েণ্ট প্রেজেন্টেশন ডিজাইনটিকে উন্নত করার জন্য সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখে।
সাধারণতঃ ভালো ফণ্টগুলো সহজে বোঝা যায় না এবং খারাপ টাইপোগ্রাফি নির্বাচন করলে তা সহজেই লক্ষ্য করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার সম্পূর্ণ প্রেজেন্টেশনে কমিক সেন্স ফন্ট ব্যবহার করেন, তাহলে এটা সহজেই নজরে পড়বে। সাধারণতঃ অস্পষ্টতার কারনেই একটি ফন্টকে চিহ্নিত করা যায়। যদি কোনও কিছু পড়া কঠিন মনে হয়, তাহলে এই বিষয়টি আপনার শ্রোতাদের কাছে আপনার প্রেজেন্টেশনের চাইতেও লক্ষ্যনীয় হয়ে ঊঠতে পারে।



একারনেই, ঐতিহ্যবাহী ফণ্টগুলোই সচরাচর পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ডিজাইনের ক্ষেত্রে সেরা। যেমন, Helvetica, Arial অথবা Gill Sans ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে রেগুলার ভার্শনটি সাধারণ লেখায়, এবং গাঢ় ভার্শনটি টাইটেলের জন্য ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণ পাঠযোগ্যতা নিশ্চিত করতে আপনার ফন্ট সাইজকে যথেষ্ট বড় করুন (যেমন 18pt) এবং টাইটেল টিকে আরও বড় করুন ( যেমন 34pt)।



বিভিন্ন ফণ্টের মিশ্রন ঘটানো সম্ভব, কিন্তু আপনি সবে মাত্র শুরু করে থাকলে বিভিন্ন ফন্টের মিশ্রণ ঘটাতে চেষ্টা করবেন না। কারন এতে সহজেই গন্ডগোল লেগে যেতে পারে। আপনি যদি কৌতুহলী হন, তাহলে সবসময় আরও ভাল ফন্ট সমন্বয় করার জন্য অনুসন্ধান করতে পারেন।
আপনি যদি টাইপোগ্রাফি দ্বারা মুগ্ধ হয়ে থাকেন, তাহলে অনলাইনে এমন অনেক সাহায্যকারী রিসোর্স পাবেন। যেমন আমি ব্যক্তিগতভাবে Typewolf পছন্দ করি।
টাইপোগ্রাফির ক্ষেত্রে সাধারণ নিয়ম হচ্ছে সলিড টাইপোগ্রাফি সাধারণত লক্ষ্যনীয় হয় না। অলক্ষ্যনীয় টাইপোগ্রাফি মানে এটা সহজপাঠ্য এবং এটা দিয়ে, ইতিমধ্যেই অনেক লেখনী সম্পন্ন হয়েছে। অবশ্যই, টাইপোগ্রাফি একটি ডিজাইনকে পরিবর্তন করার এবং প্রেজেন্টেশনটিকে আরও বেশি অনন্য করে তোলার একটি অন্যতম উপায়। কিন্তু, যখন শুরু করেন, তখন আমি মূলসূত্র ধরে রাখার জন্য অনুরোধ করবো।
এছাড়া অন্য একটি ভাবনার বিষয় হচ্ছে, কি পরিমান টেক্সট আপনি আপনার স্লাইডে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন। প্রেজেন্টেশনে পূর্ণ বাক্যের ব্যবহার খুব কমই দরকার পড়ে। তার চেয়ে বরং মূল তথ্যগুলোর জন্য বুলেট লিস্ট ব্যবহার করা অনেক ভালো এবং এটা নিশ্চিত হউন যে মানুষ আপনার প্রেজেন্টেশনের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে কিনা। 'Improving our marketing' স্লাইডটির কথা মনে আছে কি? চলুন, এটাকে পরিচ্ছন্ন করি, তাহলে আপনি সহজেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন।



৪। রঙ
রঙ নিজেই একটি জটিল বিষয়। এ ব্যপারে বুনিয়াদি ভিত্তি সম্পর্কে ভাল ধারনা থাকা সুদূরপ্রসারী ফল বয়ে আনবে। রঙ আসলে ফটোগ্রাফির মতই এক ধরনের অনুভুতি ছড়ায়। তাই, এটা বুঝতে পারা প্রেজেন্টেশন ডিজাইনের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। উজ্জ্বল, আরও স্পন্দনশীল রঙের ব্যবহার বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই আনন্দদায়ক হয়ে থাকে, যখন অনুজ্জল রঙগুলো খুব বেশী আকর্ষণ করে না (কিন্তু পেশাদারিত্ব ফুটিয়ে তোলে)।
ইউরেকা পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ডিজাইন টেম্পলেট টি কেমন তা লক্ষ্য করুন, এই স্লাইডের রঙগুলো আনন্দদায়ক ও সৃজনশীল, যদিও, এখানে বেশ কিছু সাধারণ সংক্ষিপ্ত স্লাইড এবং গাড় রঙের এক সেট স্লাইডও পাবেন।



নিঃসন্দেহে, আপনার প্রেজেন্টেশন ডিজাইনের রঙ আপনার প্রেজেন্টেশনের বিষয়বস্তুর উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করে থাকে। পেশাদার প্রেজেন্টেশনের ক্ষেত্রে, খুব সম্ভবতঃ আপনি আপনার ব্র্যান্ডের রঙ নিয়েই কাজ করে থাকবেন। আর এটা সত্যিকারভাবেই, প্রেজেন্টেশন ডিজাইনকে অনেক বেশী সহজ করে তোলে। তাই, আমি আপনাকে ডিজাইনের স্বার্থে পরীক্ষা নিরীক্ষার বদলে আপনার ব্র্যান্ডের রঙ নিয়েই কাজ করতে বলবো।
অন্যান্য ক্ষেত্রে, আপনি শুরু থেকেই রং নির্বাচন করে নিতে পারেন। সেজন্য, এখনি চিন্তিত হবেন না।
এক সেট রঙ নির্বাচন করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে একটি প্রাথমিক রঙ নিয়ে কাজ করা (উদাহরনস্বরূপ নীল রঙ নেয়া যেতে পারে) এবং সহকারী রঙ হিসেবে ধূসর নিয়ে কাজ করা যেতে পারে। (সাদা, ধূসর, কালো)। একটি অথবা দুটি রঙের ব্যবহার সবকিছুকেই খুব সাধারণ রাখে, যা গ্রহণযোগ্যতা বাড়ায়। একটি ভালো উদাহরণের জন্য আমাদের উপরিস্থিত মার্কেটিং স্লাইডটি আবার দেখতে পারেন!
দুঃসাহসী হয়ে থাকলে, আপনি রঙ তত্ত্ব সম্বন্ধে আরও অনেক কিছু জানতে পারবেন। যেমন, প্রশংসাসূচক ও বৈপরীত্যপূর্ণ রঙ ব্যবহার করতে পারেন।
সহজ উপায়ে শুরু করার পদ্ধতি হচ্ছে অ্যাডবি কালার দিয়ে শুরু করা। 'Explore' সেকশনে ব্রাউজ করে আপনি আরও অনেক সুন্দর সুন্দর রঙের সংমিশ্রণ পাবেন। ডিজাইনের জন্য কিছু সুন্দর সংমিশ্রন দেখার আরও একটি পদ্ধতি হচ্ছে ডিজাইন সাইট Dribbble অথবা Behance ব্যবহার করা এবং অনুপ্রেরণা পেতে একটি ডিজাইনে কি কি রঙ ব্যবহার করা হয়েছে তা দেখা।



৫। বিস্তারিত
পরিশেষে, আপনার প্রেজেন্টেশন ডিজাইন উন্নত করতে এই মুহূর্তে সম্ভবত সবচেয়ে আকর্ষণীয় উপায় হচ্ছে সঠিক বিবরণ দেয়া। আপনি জেনে বিস্মিত হবেন যে, কিছু সুক্ষ্ম উপাদানের ব্যবহার কিভাবে আপনার প্রেজেন্টেশনটিকে দেখতে আরও উন্নত করতে পারে।
ফটোগ্রাফি
ফটোগ্রাফির ব্যবহার ছাড়া একটি প্রেজেন্টেশন সম্পূর্ণ হয়ে উঠতে পারে না। ফটোগ্রাফি হচ্ছে হচ্ছে আপনার প্রেজেন্টেশনের জন্য চাক্ষুষরূপে সাপোর্ট আদায়ের সবচেয়ে সহজ উপায়। প্রেজেন্টেশন ডিজাইন উন্নত করার একটি সহজ কৌশল হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী স্টক ফটোগ্রাফি থেকে দূরে থাকা এবং Unsplash এর মত ওয়েবসাইট থেকে ইমেজ ব্যবহার করা। Unsplash এ আছে ব্যবহার করার জন্য বিনামূল্যের সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি যা স্টক ফটোগ্রাফি ইমেজের চেয়ে অনেক বেশি ভিন্ন রকম অনুভুতি সৃষ্টি করবে।
আইকনসমূহ
আপনার উপস্থাপনা দৃশ্যতঃ আরও উন্নত করার সহজ উপায় হচ্ছে আইকন ব্যবহার করা। আইকন ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভালো, যখন আপনার প্রেজেন্টেশনে অল্প কিছু টেক্সট থাকে এবং আপনি যদি অহরহ ফটোগ্রাফি ব্যবহার করতে না চান।
একটি আইকন কিট থেকেই সবগুলো আইকন নেয়াই ভালো। তাহলে আপনার সব আইকনের একই রকম স্টাইল হবে। মজার ব্যপার হচ্ছে, আপনার কিনে নেয়া বেশীরভাগ পাওয়ার পয়েন্ট থিমেই একটি করে আইকন কিট অন্তর্ভুক্ত আছে। যদি না থাকে, তাহলে আপনি অনলাইনে বিনামুল্যে ব্যবহারযোগ্য বিভিন্ন আইকন কীট, অথবা GraphicRiver থেকে আইকন কিট কিনে নিতে পারেন।



চার্টসমূহ
তথ্য নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে কিছু চার্টের ব্যবহার আপনার প্রেজেন্টেশনের ক্ষেত্রে সাহায্যকারী হতে পারে।
ডিজাইন উপাদান হিসেবে চার্টের ব্যপারে মনোযোগ দিতে হবে, কারন এটি দিয়ে দর্শকদের সামনে অনেক তথ্য তুলে ধরা সম্ভব। আপনার সুবিধার জন্য চার্ট ব্যবহার করতে বেশ কিছু সুচিন্তিত মতামত তুলে ধরা হলোঃ
- অনেক বেশী চার্ট ব্যবহার করবেন না। বরং নুন্যতম পর্যায়ে ব্যবহার করুন, শুধুমাত্র যখন এগুলো আপনি যা বলতে চান, তা যথার্থরূপে ফুটিয়ে তুলে।
- আপনার তথ্যগুলো সহজেই পাঠযোগ্য কিনা তা নিশ্চিত হউন। সেজন্য শৌখিন অ্যানিমেশন বা অপ্রয়োজনীয় ত্রিমাত্রিক নকশা এড়িয়ে যেতে পারেন।
- আপনার চার্টের মূল বিষয়গুলো পরবর্তীতে ব্যখ্যার জন্য একটি স্লাইড রাখুন।
মার্কেটোফাই পাওয়ারপয়েন্ট টেম্পলেটে একটি তথ্যচালিত প্রেজেন্টেশন ডিজাইন আছে। এটা GraphicRiver এর একটি সর্বাধিক জনপ্রিয় পিপিটি টেম্পলেট, এবং এতে অন্তর্ভুক্ত আছে বেশ কিছু ইনফোগ্রাফিক, চার্ট, ডায়াগ্রাম, যা দিয়ে অতিদ্রুত কাজ করা যায়।



আরও সাহায্যকারী ইনফোগ্রাফিক এবং তথ্যচালিত পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ডিজাইন টেম্পলেট আবিষ্কার করুনঃ
মাল্টিমিডিয়া
যদি সম্ভব হয়, আপনার উপস্থাপনাতে কিছু মাল্টিমিডিয়া যোগ করুন। এতে আপনি বেশ কিছু উপায়ে সহায়তা পেতে পারেন। প্রথমতঃ এটা আপনার প্রেজেন্টেশনটিকে পরস্পর ক্রিয়াশীল করে তুলতে পারে। একটি ক্রিয়াশীল উপাদান আপনাকে এমন কিছু ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করে যা শব্দ ও ছবির মাধ্যমে সম্ভব নয়।
উদাহরণস্বরূপ, আপনার যদি মোবাইল অ্যাপের মত কোনও ডিজিটাল পণ্য থাকে, তাহলে একটি ভিডিওর ব্যবহার, কিছু ফিচার ডেমো হিসেবে তুলে ধরার চেয়েও উন্নত বিকল্প হতে পারে। এটা একই সাথে প্রেজেন্টেশনটিকে অভিজ্ঞ করে তুলবে।
অবস্থান্তর এবং অ্যানিমেশন
অবশেষে, আরেকটি ডিজাইন উপাদান হিসেবে আপনার স্লাইডের অবস্থান্তর ও অ্যানিমেশনকে বিবেচনা করা যায়।
উপরের বিষয়টি কিছুটা কৌশলী, কারন অ্যানিমেশন এবং সঠিক জায়গায় অবস্থান্তরের ব্যবহারও অনেক সময় শ্রোতাকে বিভ্রান্ত করতে পারে। মনে রাখতে হবে যে,(এবং যা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই খুব ভালো কাজ করে) আপনার প্রেজেন্টেশনের ৮০%-এর জন্যই আসলে স্লাইড অথবা অ্যানিমেশনের জন্য কোনও রকম অবস্থান্তরের দরকার নেই।
যদি আপনি এটা নিশ্চিত করতে চান যে, আপনার দর্শকরা আপনার বলা বিষয়গুলো মনে রাখুক, তাহলে অবস্থান্তর(ট্রানজিশন) বা অ্যানিমেশন কেবল দরকারী জায়গায়ই ব্যবহার করুন। দৃশ্যমান শ্রেণিক্রমের মূল বিষয়গুলো এখানেও ব্যবহার করা যায়।
কিভাবে আপনার পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ডিজাইনে অ্যানিমেশন ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে আরও জানুনঃ
কিভাবে একটি ভালো পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ডিজাইন প্রক্রিয়া অনুসরন করা যায়।
পরিশেষে, চলুন জানা যাক কিভাবে আপনি উপরের শিক্ষনীয় সব কিছুই একটি পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে কাজের সময় প্রয়োগ করতে পারবেন।
১ম ধাপ। ডিজাইনের আগেই কনটেন্টের পরিকল্পনা তৈরি করুন।



আপনার পিপিটি স্লাইড ডিজাইনের উপর কাজ শুরু করার আগে, আপনার কন্টেন্ট ও মূল বার্তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা অনেক বেশী ফলপ্রসু। আপনার প্রেজেন্টেশনটি দেখার পর শ্রোতারা কোন ব্যাপারটি মনে রাখবে, সে সম্পর্কে নিজেকে প্রশ্ন করুন।
এর উপর ভিত্তি করেই, আপনি আপনার স্লাইডটিকে পরিবর্তন করে নিতে পারেন যা এই মূল বার্তাগুলো সমর্থন করবে। এবং আপনার কন্টেন্ট ও মূল বার্তা মানানসই কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন। এটাই হচ্ছে উপরের সব ডিজাইন পরামর্শ প্রয়োগের মূলনীতি। উদাহরণস্বরূপ, যখন আপনি আপনার মূল বার্তাটি উপস্থাপন করবেন, তখন সেখানে চাতুর্যের সঙ্গে অ্যানিমেশন ব্যবহার করতে পারেন।
সংক্ষেপে, আপনার মূল বার্তা দিয়ে শুরু করুন। ডিজাইনের সব সুযোগ অনুসরন করুন। প্রেজেন্টেশনের লেখা তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানুনঃ
২য় ধাপ। এবার প্রেজেন্টেশন ডিজাইনের মূল ভিত্তি দিয়ে শুরু করুন।
যখন আপনার কনটেন্ট তৈরি করা হয়ে যাবে, তারপর আপনার স্লাইড ডিজাইনের মূল ভিত্তি নির্ধারণ করে নেয়া উচিৎ। এটা হতে পারে রঙ ও টাইপোগ্রাফি নির্বাচনের মাধ্যমে। আপনার পছন্দমত একটি প্রাথমিক রঙ ও ফন্ট নির্বাচন করে শুরু করতে পারেন।
৩য় ধাপ। ফটোগ্রাফি সংগ্রহ করুন
আপনি সম্ভবতঃ কোন না কোন প্রকার ফটোগ্রাফি (অথবা অন্য কোন ছবি) আপনার প্রেজেন্টেশনে ব্যবহার করবেন। তাই এই বিষয়টি আপনার পছন্দমত ছবি সংগ্রহ করার মাধ্যমে শুরু করতে পারেন। এবং যখন আপনি ডিজাইন শুরু করবেন তখন সেখান থেকে আপনার পাওয়ারপয়েণ্ট প্রেজেন্টেশনের জন্য নির্দিষ্ট ছবি নির্বাচন করবেন।
উপরের সবগুলো ঠিক করে, আপনি মূল ডিজাইন নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন।
৪র্থ ধাপ। আপনার স্লাইড লেআউটসমূহ নির্ধারণ করুন
অবশেষে, এটা হচ্ছে প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা স্লাইড লেআউট নিয়ে কাজ করার সময়। প্রতিটি স্লাইডের জন্য অনন্য লেআউট নিয়ে কাজ করার দরকার নেই, কিন্তু বিচিত্রতা সাহায্যকারী হতে পারে। সাধারণতঃ ২০ টি স্লাইডের একটি প্রেজেন্টেশনের জন্য, আমি ৬-৮ রকমের লে আউট ব্যবহার করে থাকি। উদাহরণতঃ এই প্রেজেন্টেশনের জন্য আমি তিন রকম লেআউট ডিজাইন করেছি যা আপনি অনুপ্রেরনার জন্য দেখতে পারেনঃ









একটি লেআউট খুবই সাধারণ হতে পারে। উদাহরনতঃ একটি সাধারণ টাইটেলের সঙ্গে সাব টাইটেল অথবা একটি স্লাইডে একটি ছবি জুড়ে দেয়া। অথবা, একটি লেআউট কিছুটা জটিল হতে পারে। উদাহরনতঃ বুলেট পয়েন্টের সাথে একটি গ্রাফ জুড়ে দেয়া।
মূল কৌশল হচ্ছে, যথেষ্ট সংখ্যক লেআউট তৈরি করা যা স্লাইড লেআউটের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ও মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হয়।
যখন আপনি সব লেআউটগুলো ডিজাইন করবেন, তখন পাওয়ারপয়েন্ট ডিজাইনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে পারেন যে, আপনার পুরো প্রেজেন্টেশনটি কেমন দেখায়। আপনার প্রেজেন্টেশনটি একবার অবশ্যই অনুশীলন করে দেখবেন! তারপর, আপনি আপনার ডিজাইনটি পাকা করে প্রেজেন্টেশনটি সম্পূর্ণ করতে পারেন!
আরও কয়েকটি সাহায্যকারী পাওয়ারপয়েন্ট টিউটোরিয়াল রিসোর্স
এখানে Envato Tuts+ থেকে আরও কিছু টিউটোরিয়াল ও রিসোর্স আপনার প্রেজেন্টেশন স্কিল বাড়াতে সাহায্যকারী হিসেবে দেয়া হলোঃ
- মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট৩৭ টি কার্যকরী পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন টিপসব্র্যাড স্মিথ
- প্রেজেন্টেশনসকিভাবে একটি প্ররোচনামূলক পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন তৈরি করবেনসিলিন রুকি
- মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্টমাইক্রসফট পাওয়ারপয়েণ্টের Views অপশন নিয়ে কিভাবে কাজ করবেনএন্ড্রু চিল্ড্রেস
আপনার পরবর্তী পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে ডিজাইনের মূল নীতিগুলো প্রয়োগ করুন।
এটুকুই! আমরা এখানে কার্যকর পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ডিজাইনের মূল ভিত্তিগুলো তুলে ধরেছি। একটি মূলমন্ত্র হিসেবে মনে রাখতে হবে, ভালো ডিজাইন সব সময়ই সূক্ষ্ম ও নিখুঁত থাকে। সেরা ডিজাইন সাধারনত অদৃশ্য থাকে।
সবকিছু ডিজাইন করার পরিবর্তে, এটাকে সাধারণ রাখতে পারেন এবং প্রক্রিয়াটির উপর আলোকপাত করতে পারেন যা আপনার কাজে লাগবে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যবহারের জন্য কিছু লেআউট তৈরি করে রাখতে পারেন। অ্যানিমেশন সেক্ষেত্রেই ব্যবহার করুন যেখানে দরকার। এছাড়া রঙ গুলোকে সাধারণ রাখুন।
যদি আপনার সময়স্বল্পতা থাকে, তাহলে আপনি একটি প্রফেশনাল পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দিয়ে শুরু করতে পারেন এবং নিজের চাহিদামত এটাকে পরিবর্তন করে নিতে পারেন। এখানে বেশ কিছু চমৎকার পাওয়ারপয়েন্ট টেম্পলেট আছে যা আপনি এনভেটো এলিমেণ্টসে খুঁজে দেখতে পারেন, যেখানে আপনি অসংখ্য প্রেজেন্টেশন ডিজাইন, ওয়েব টেমপ্লেটস, এবং গ্রাফিক এসেট মাসিক ফি দিয়ে ডাউনলোড করতে পারবেন।
ডিজাইন করা আসলে খুবই সোজা যদি আপনি এটাকে নিজের জন্য অপ্রয়োজনীয় কঠিন করে না তুলেন।
যদি আপনার আরও কোনও প্রশ্ন থাকে, তাহলে আমাকে টুইটারে জানাতে পারেন অথবা নিচে কমেন্ট করতে পারেন। সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ!
